Blog – পাঠাগার নিয়ে ব্লগ লিখুন


বই পড়া ও বই নিয়ে বিখ্যাত কিছু উক্তি
(লোকগবেষক হামিদুর রহমান পাঠাগার ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র-এর পাঠকদের জন্য)

জীবনে তিনটি জিনিসের প্রয়োজন – বই, বই এবং বই।

১. বইয়ের মত এত বিশ্বস্ত বন্ধু আর নেই।

— আর্নেস্ট হেমিংওয়ের

২. ভাল বন্ধু, ভাল বই এবং একটি শান্ত বিবেক: এটি আদর্শ জীবন।

— মার্ক টোয়েন

৩. যদি এমন কোনও বই থাকে যা আপনি পড়তে চান তবে এটি এখনও লেখা হয়নি তবে আপনাকে অবশ্যই এটি লিখতে হবে।

— টনি মরিসন

৪. ভালো বই পড়া মানে গত শতাব্দীর মহৎ লোকের সাথে আলাপ করা।

— দেকার্ত

৫. বই ছাড়া একটি কক্ষ আত্মা ছাড়া দেহের মত।

— মার্কাস টুলিয়াস সিসারো

৬. একজন মানুষ ভবিষ্যতে কী হবেন সেটি অন্য কিছু দিয়ে বোঝা না গেলেও তার পড়া বইয়ের ধরন দেখে তা অনেকাংশেই বোঝা যায়।

— অস্কার ওয়াইল্ড

৭. অন্তত ষাট হাজার বই সঙ্গে না থাকলে জীবন অচল।

— নেপোলিয়ান

৮. বই কিনে কেউ কোনদিন দেউলিয়া হয় না।

— সৈয়দ মুজতবা আলী

৯. বই পোড়ানোর চেয়েও গুরুতর অপরাধ অনেক আছে। সেগুলোর মধ্যে একটি হল বই না পড়া।

— জোসেফ ব্রডস্কি

১০. একটি ভালো বইয়ের কখনোই শেষ বলতে কিছু থাকে না।

— আর ডি কামিং

১১. বই বিশ্বাসের অঙ্গ, বই মানব সমাজকে টিকাইয়া রাখিবার জন্য জ্ঞান দান করে। অতএব, বই হইতেছে সভ্যতার রক্ষাকবচ।

— ভিক্টর হুগো

১২. বই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ আত্মীয়, যার সঙ্গে কোনদিন ঝগড়া হয় না,কোনদিন মনোমালিন্য হয় না।

— প্রতিভা বসু

১৩. বই খুলে যা দেখে নেয়া যায় তা কখনো মুখস্থ করতে যেয়ো না।

— আলবার্ট আইনস্টাইন

১৪. বই কিনলেই যে পড়তে হবে, এটি হচ্ছে পাঠকের ভুল। বই লেখা জিনিসটা একটা শখমাত্র হওয়া উচিত নয়, কিন্তু বই কেনাটা শখ ছাড়া আর কিছু হওয়া উচিত নয়।

— প্রমথ চৌধুরী

১৫. বই হচ্ছে অতীত আর বর্তমানের মধ্যে বেঁধে দেয়া সাঁকো।

— রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৬. বই হচ্ছে মস্তিষ্কের সন্তান।

— জনাথন সুইফট

১৭. বই হলো এমন এক মৌমাছি যা অন্যদের সুন্দর মন থেকে মধু সংগ্রহ করে পাঠকের জন্য নিয়ে আসে।

— জেমস রাসেল

১৮.জীবনে তিনটি জিনিসের প্রয়োজন- বই, বই এবং বই।

— ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

১৯. ঘরের কোনো আসবাবপত্র বইয়ের মতো সুন্দর নয়।

— সিডনি স্মিথ

২০. বই লেখাটা নিষ্পাপ বৃত্তি এবং এতে করে দুষ্কর্ম থেকে নিজেকে রক্ষা করা যায়।

— বার্ট্রান্ড রাসেল

২১. খুব কম বয়সেই বই পড়ার প্রতি আমার ঝোঁক তৈরি হয়। শিশু হিসেবে আমার বাবা–মাও বই কিনতে আমাকে ইচ্ছামতোই টাকা দিতেন। তাই আমি প্রচুর পড়তাম

— বিল গেটস

২২. রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে যাবে, বই, সেতো অনন্ত যৌবনা।

— ওমর খৈয়াম

২৩. কথাটা এই নয় যে বই এর থেকে কি এমন পাবে যা তোমাকে সমৃদ্ধ করবে-কথাটা হল বই তোমার থেকে এমন কিছু পাবে যা তোমার জীবনকে বদলে দেবে।

— রবীন শর্মা

২৪. কোনো বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত হতে চাইলে তা নিয়ে বই লেখা শুরু করাই ভালো।

— বেঞ্জামিন ডিজরেইলি

২৫. একটি বই পড়ার দুটি উদ্দেশ্য থাকা উচিত একটি হল- বইটিকে উপভোগ করা অন্যটি হল- বইটি নিয়ে গর্ব করতে পারা।

— বার্ট্রান্ড রাসেল

২৬. সেদেশ কখনো নিজেকে সভ্য বলে প্রতীয়মান করতে পারবে না যতক্ষণ না তার বেশিরভাগ অর্থ চুইংগামের পরিবর্তে বই কেনার জন্য ব্যয় হবে।”

— ভলতেয়ার

২৭.বই পড়াকে যথার্থ হিসেবে যে সঙ্গী করে নিতে পারে,তার জীবনের দুঃখ কষ্টের বোঝা অনেক কমে যায়।“

— শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

২৮. আমরা যখন বই সংগ্রহ করি, তখন আমরা আনন্দকেই সংগ্রহ করি।

— ভিনসেন্ট স্টারেট

২৯. আমাদের আত্মার মাঝে যে জমাট বাধা সমুদ্র সেই সমুদ্রের বরফ ভাঙার কুঠার হলো বই।

— ফ্রান্ৎস কাফকা

৩০. ভালো খাদ্য বস্তু পেট ভরে কিন্ত ভাল বই মানুষের আত্মাকে পরিতৃপ্ত করে।

— স্পিনোজা

৩১. একটি ভালো বই হলো বর্তমান ও চিরকালের জন্য সবচেয়ে উৎকৃষ্ট বন্ধু।

— টুপার

৩২. যদি আপনি এমন একটি বই পড়েন যা অন্যরা সবাই পড়ছে, তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন অন্য সবাই কি ভাবছে ।

— হারুকি মুরাকামি

৩৩ কতকগুলো বই সৃষ্টি হয় আমাদের শিক্ষা দেবার জন্য নয়, বরং তাদের উদ্দেশ্য হলো আমাদের এই কথা জানানো যে, বইগুলোর স্রষ্টারা কিছু জানতেন।

— গ্যেঁটে

৩৪. যে বই পড়েনা,তার মধ্যে মর্যাদাবোধ জন্মেনা।

— পিয়ারসন স্মিথ

৩৫. আইনের মৃত্যু আছে কিন্ত বইয়ের মৃত্যু নেই।

— এনড্রিউ ল্যাঙ

৩৬. বই হল বিশেষ দর্পন যাতে আমরা নিজেকে যেমন খুঁজে পাই, তেমনি আমাদের চারপাশে থাকা মানুষ ও পরিবেশকেও দেখতে পাই।

— কিশোর মজুমদার

৩৭. বই হল মানুষের অনুভূতির ঘরে প্রবেশ করার অন্যতম চাবি।

— ফেরদৌসি মঞ্জিরা

৩৮. বই উপহার দেওয়ার মাধ্যমে আমরা আসলে প্রিয়জনকে মানসিক উন্নয়নের রাস্তা দেখিয়ে দেই।

— ফেরদৌসি মঞ্জিরা

৩৯. মন হল হাজার দুয়ারি ঘর। যারা বই পড়ে না তাদের কাছে সেই বেশীরভাগ ঘরগুলো অপ্রবিষ্টই থেকে যায়।

— কিশোর মজুমদার

৪০. বিচক্ষণ পুরুষ মানুষের জীবন নিয়ন্ত্রণ করে দুটি বিষয় একটি হল বই অপরটি হল বউ।

—কিশোর মজুমদার

৪১. যারা বইয়ের পাতা ভালো করে পড়তে পারে তারা মানুষের চোখের পাতাও পড়তে পারে।

— কিশোর মজুমদার



_______________________________________________________________________________________

শিশুদের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলবেন যেভাবে

বই মানুষের প্রিয় বন্ধু। বই মানুষকে হাসায়, কাঁদায় আবার আনন্দ দেয়। বই কখনও কাউকে ছেড়ে যায় না। তবে সম্প্রতি সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ায় বড়দের সঙ্গে শিশুরাও বই থেকে মুখ পিরিয়ে নিচ্ছে। পাঠ্যবইয়ের বাইরে বইগুলো পড়লে শিশুর জ্ঞানের ভাণ্ডার আরও বিকাশিত হবে।

তবে অনেক অভিভাবক যদিও বুঝতে পারছেন গল্পের বই পড়ার উপকারিতা সম্পর্কে, কিন্তু অনেক সময় দেখা যাচ্ছে- সমস্যাটা থেকে যাচ্ছে শিশুর দিক থেকে। স্মার্টফোন, কার্টুন আর মোবাইল গেমের কারণে অনেক শিশুর মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস হারিয়ে যেতে বসেছে।

বই পড়াকে আমরা সবসময় একটু অন্যভাবে দেখি। একবার ভাবুন তো, সাদা পৃষ্ঠায় কালো কালিতে দেয়া আঁচড়গুলোর ওপর দিয়ে চোখ বুলিয়ে যাওয়ার সময় আমরা কিভাবে অন্য এক জগতে হারিয়ে যাই। চোখ বুজলেই যেন দেখতে পাই চরিত্রগুলোকে। এখানে মূল সার্থকতা লেখকের। তাই তো আমরা নতুন প্রজন্মকে এই অসাধারণ কল্পনাশক্তির বীজ তুলে দিতে পারলে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হবে সারা পৃথিবী।

আসুন জেনে নিই শিশুর জ্ঞানকে বিকাশিত করতে হলে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলবেন যেভাবে-

শিশুর মনে প্রশ্ন জাগ্রত রাখুন
শিশুরা একটু বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে আশপাশের সব কিছু নিয়ে জানতে চায়। তার চোখে থাকে রাজ্যের বিস্ময়। এ সময় আপনার কাজ হবে তার জানতে চাওয়া প্রশ্নের ক্রমাগত উত্তর দেয়া। এখানে লক্ষ্য রাখার বিষয় হচ্ছে- তার প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে যেন আপনি ক্লান্ত হয়ে না যান। এবং রেগে গিয়ে তাকে ধমক না দেন। আপনি তার এই উৎসুক মনটার সাহায্য নিয়েই তার সঙ্গে বইয়ের সম্পর্ক জুড়ে দিতে পারেন খুব ছোট বয়সেই!

নিয়মিত বই পড়ার আগ্রহ
যখন সে আশপাশের সব কিছুর সঙ্গে বইয়ের মিল খুঁজে পাবে, তখন সে আপনা-আপনিই বইয়ের সঙ্গে লেগে থাকবে দিনরাত; অনেকটা সময় কাটাবে ছবিগুলো চিহ্নিত করতে করতে।এখন আপনার কাজ হবে তার জন্য নতুন নতুন বই কিনে আনা। এতে করে দেখবেন নতুন আসার পূর্বেই সে আগের বইগুলো আপাদমস্তক দেখে ফেলেছে। এবং নতুন বই আসার জন্য দারুণ উদ্যমে অপেক্ষা করছে!

গল্পের বই তাকে পড়ে শোনান
শিশুর বয়স যদি ২-৬ বছরের মধ্যে হয়, তা হলে নিয়ম করে প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটি করে গল্পের বই তাকে পড়ে শোনান। সারা দিন নানা কাজ করে ক্লান্ত শরীরে হয়তো ভাবেন একটু বিশ্রাম নেবেন। কিন্তু ভেবে দেখুন প্রতিদিন কিন্তু শিশু ঘুমের সময় আপনি তার সঙ্গেই শুয়ে সাধারণত ঘুম পাড়ান। এই কাজটিই এখন শুধু করুন– কেবল ঘুমানোর আগে ১৫ মিনিট হলেও একটি বই তাকে পড়ে শোনান। এতে করে তার স্মার্টফোন বা কার্টুনের প্রতি আকর্ষণ কমতে থাকবে এবং আপনিও শিশুর সঙ্গে চমৎকার কিছুটা সময় কাটাতে পারবেন।

জন্মদিনে বই উপহার দিন
শিশুর জন্মদিনে বেশিরভাগ অভিভাবক খেলনা উপহার দিয়ে থাকেন। তবে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে চাইলে ছোটবেলায় শিশুর জন্মদিনে বই উপহার দিন। এতে করে আপনার সন্তানও বইয়ের প্রতি আপনি যে অনেক গুরুত্ব দিচ্ছেন সেটি বুঝবে এবং ধীরে ধীরে নিজের মধ্যেও বইয়ের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হবে।আগামী জন্মদিনে তাই আপনার শিশুকে বই কিনে দিন। অন্য কারোর জন্মদিনে গেলে তাকে বই উপহার দিন।

বই বাছাই করুন
অনেক সময় শিশুরা বই পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। কারণ বইগুলো তাদের বয়স উপযোগী হয় না। তাই সঠিক বইটি বাছাই করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।শিশুর বয়স যদি ৪-৫ বছরের নিচে হয় তা হলে এমন বই কিনুন যেখানে একটি পৃষ্ঠায় ৩-৪ লাইন করে থাকে। ছোট শিশুদের জন্য আরও কম লাইন হলে ভালো হয়। কালারফুল বই হতে হবে অবশ্যই। লেখার ভাষা হতে হবে খুব সহজ।সঠিক নিয়মে বই পড়ে শোনানঅনেক সময় সঠিক নিয়মে বই পড়ে না শোনানোর জন্য শিশুদের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ তৈরি হয় না অথবা কিছু দিন পর মরে যায়। শিশুদের কিন্তু কোনো বিষয়েই বেশি দিন মনোযোগ থাকে না। তাই নতুন ধরনের বই দিতে হবে। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে- তাকে সঠিক নিয়মে বই পড়ে শোনাতে হবে।

প্রতি মাসে শিশুকে একবার বই কিনতে নিয়ে যান
শিশুকে সঙ্গে নিয়ে বই কেনার অভ্যাসটি গড়ে তুলতে পারলে আপনার শিশুটি পাঠক হওয়ার পথে অনেক দূর এগিয়ে যাবে। সপ্তাহের বন্ধের দিনগুলোতে আপনার সন্তানকে নিয়ে বিভিন্ন বইয়ের দোকান থেকে ঘুরে আসুন। এতে করে সে যেমন নতুন বইয়ের ঘ্রাণ পাবে, যা তাকে বইয়ের প্রতি আরও আগ্রহী করবে, একই সঙ্গে বইয়ের দোকান এবং লাইব্রেরিতে যাওয়ার প্রতিও আগ্রহী করবে।নিজস্ব বইয়ের সংগ্রহআপনার বইয়ের তাকটি যদি আপনার পছন্দের বইয়ের সংগ্রহে পূর্ণ থাকে, সে নিজেও তার ব্যক্তিগত লাইব্রেরি তৈরি করতে ইচ্ছুক হবে । তার রুমে একটি বইয়ের তাক রাখুন অথবা তাকে আপনার নিজের বইয়ের তাক বা আলমারি থেকে কিছু জায়গা করে দিন। সে হয়তো সযত্নে তার পছন্দের বইগুলো তার জন্য রাখা জায়গাটিতে সাজিয়ে রাখবে। এতে করে সে বইয়ের যত্ন নেয়া শিখবে এবং বই পড়ার প্রতি আরও বেশি আগ্রহী হবে।

Source: যুগান্তর, ৩০ জুন ২০১৮
https://www.jugantor.com/lifestyle/64892

ভাষা শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানমালা ২০২২
Design a site like this with WordPress.com
Get started